নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ নিরীহ পথযাত্রী থাকাবস্থায় সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়া হামলার শিকার হওয়ার ঘটনায় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে ডাকযোগে লিখিত অভিযোগ দিয়েও এ পর্যন্ত সুষ্ঠুবিচার, মিমাংসা বা ক্ষতিপূরণের আশ^াস না পেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে কলেজ পড়–য়া ছাত্র মো: দাউদ ইব্রাহীম। ১৩ সেপ্টেম্বর রোববার বেলা ১২ টায় বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি (বিআরইউ) কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন হয়। বিষয়টির সুষ্ঠুসমাধান ও ক্ষতিপূরণের দাবী জানিয়ে ছাত্র দাউদ ইব্রাহীম লিখিত বক্তব্যে বলেন, ফরিদপুর সরকারী রাজেন্দ্র কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের দর্শন বিভাগের ছ্াত্র তিনি এবং বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার কাজিরচর গ্রামের বেপারী বাড়ির মোঃ মাহবুব আলম (স্বপন) এর ছেলে সে। গত ২৭-০৪-২০২০ ইং তারিখে তার বোন সাবিহা মাহ্বুব ৭ মাসের অন্তঃসত্তা থাকায় বরিশাল আরিফ মেমোরিয়াল হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা শেষে বোনের স্বামী বাড়ি ভোলা সদর কালিবাড়ি রোড সংলগ্ন বাসবভনের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। পরদিন অর্থাৎ ২৮-০৪-২০২০ ইং তারিখে বোনের স্বামীর বাড়ি থাকাবস্থায় দাউদ ইব্রাহীম তার মায়ের অসুস্থতার কথা শুনে নিজ বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা হয়। তার মা হৃদরোগে আক্রান্ত।
ওই দিন সকাল ৯ টার সময় ১০নং আলিমাবাদ ইউনিয়নের গাগুরিয়া ঘাট থেকে ট্রলার ছেড়ে মেহেন্দিগঞ্জ থানাধীন ১৪নং শ্রীপুর ইউনিয়নের লঞ্চঘাটের একটু আগে রাস্তার মাথায় আসার পরই দেখা যায় অনেক মানুষ লাঠি, পাইপ, বড় রড, রামদা নিয়ে তাদের যাত্রীবাহি ট্রলার পথরোধ করে।
এমতাস্থায় দাউদ ইব্রাহীম শুধু ব্যক্ত করে, তার মা খুবই অসুস্থ তাই তাড়াতাড়ি বাড়ি যেতে হবে। আপনারা যাত্রীবাহি ট্রলার পথরোধ করছেন কেন ? এ কথা বলা মাত্রই ১০/১৫ জন এসে দাউদ ইব্রাহীমের মাথাসহ শরীরের নানা অঙ্গে লাঠি, লোহার রড ও পাইপ দিয়ে আঘাত করে। এবং ঘটনাস্থলে সে অজ্ঞান হয়ে যায়। জ্ঞান ফিরে সে দেখতে পায় মাথায় রক্ত, শরীর উলঙ্গসহ অধিকাংশ স্থান ক্ষত-বিক্ষত হয়ে গেছে। হামলাকারীরা তার পকেটে থাকা ১৫ হাজার টাকা মূল্যের নকিয়া থ্রি মোবাইলটি ভেঙ্গে ফেলে। পরে ট্রলার চালক নান্নু জোমাদ্দার আহত ছাত্রকে তার বসতবাড়ীতে নিয়ে যায়। স্থানীয় চিকিৎসায় অবনতি হওয়ায় গত ২৯/০৪/২০২০ইং তারিখে দাউদ ইব্রাহীমের কে ভোলা সদর হাসপাতাল ভর্তি করা হয়। তিনি সুস্থ্য হয়ে তার আত্মীয়-স্বজনসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের জানিয়েও মিমাংসা হতে বা করতে ব্যর্থ হন।
মোবাইল ডিভাইস ও চিকিৎসাসহ সবকিছু মিলিয়ে তার ৪৩ হাজার ৫৮০ টাকা খরচ হয়েছে বলে জানান। ক’দিন পর দাউদ ইব্রাহীম জানতে পারে ওই হামলার ঘটনায় মোঃ মিজানুর রহমান নামের এক যাত্রী মেহেন্দিগঞ্জ থানায় হামলাকারীদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছে। যার মামলা নং ০১/৬০। তাং-০১/০৫/২০২০ইং। এই মামলার আসামীরাই তার ওপর হামলা চালিয়েছিল। তবে মামলার বাদী এবং আসামী পক্ষের কাউকেই চিনে না দাউদ ইব্রাহীম। দায়েরকৃত মামলার প্রথম ৩ আসামি হল, মোঃ জব্বার শেখ (৪৭), মোঃ জাহাঙ্গীর রাঢ়ী (৫৫), মোঃ কবির মৃধা (৩৫)সহ ১২ জন। এছাড়া অজ্ঞাত রয়েছে ৪/৫ জন আসামি। ছাত্র জীবনে ধারদেনা করে চিকিৎসার অর্থ ব্যয় করেছে দাউদ ইব্রাহীম। স্থানীয়ভাবে সমাধান না পেয়ে ছাত্র দাউদ ইব্রাহীম গত ৩১/০৮/২০২০ইং তারিখে ডাকযোগে হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য, পুলিশের আইজিপি, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, র্যাব-৮ ও মেহেন্দিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে অভিযোগ দেয়। কিন্ত এখন পর্যন্ত কোন সুবিচার পাইনি। এবং কেউ তাকে সমাধানসহ ক্ষতিপূরনের আশ^াসও দেয়নি বলে তিনি অভিযোগ করেন।
Leave a Reply